Technology
এয়ারপোর্টে বা এরকম কোন জায়গায় পৌঁছে কখনো পৌঁছানোর পর খেয়াল হয়েছে যে ফোনটা চার্জ করে বেরোনো হয় নি ? সামনেই একটা চার্জিং ষ্টেশনও পেয়ে গেলেন, ফোনটা চার্জ ও করে নিলেন। এরপর কিছুক্ষণ পরেই বিমানযাত্রা , দু-আড়াই ঘন্টার বিমানযাত্রা শেষে গন্তব্যে পৌঁছালেন। ফ্লাইট মোড থেকে ফোনটা নরম্যাল করলে পরপর SMS ঢোকা শুরু করল যে ব্যাঙ্ক account থেকে একগাদা টাকা বেরিয়ে গেছে। কি করে হল বলুন তো ? এই প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা হবে আজকের এপিসোডে , তার আগে বলুন তো শেষ কবে কারন ছাড়া পালস , এক্লেয়ার্স বা অন্য কোন টফি কিনেছেন মনে পড়ে ? আগে তো দোকানদার খুচরো নেই বলে দিব্বি হাতে ধরিয়ে দিত কোন না কোন লজেন্স। UPI আসার পর আমরা exact amount পেমেন্ট করি। ফলে ওই সব লজেন্সের পুশ সেলিং একেবারে বন্ধ। দু হাজার দশ থেকে দু হাজার ষোলো সতেরো অব্দি এই সব কম্পানি প্রচুর গ্রোথ দেখিয়েছে। এখন সবাই আগের সেল ভল্যুমে যেতেই স্ট্রাগল করছে। এটা আমি ইন্টারনেটেই পড়েছি কয়েকদিন আগে, তখনই ভেবে রেখেছিলাম UPI নিয়ে বলার সময় এটা বলতেই হবে আগের এপিসোডে যখন আড্ডা দিয়েছি UPI নিয়ে, ওটাতে এটা বলতে একদম মিস করে গেছি। টেকনিক্যাল জিনিসপত্র কত সহজ করে বলা যায় সেটা ভাবতে ভাবতে, এপিসোড রেকর্ড করার সময় মাথা থেকে একদম বেরিয়ে গিয়েছিল। অবশ্য এপিসোডটা একটু তাড়াহুড়ো করেই রেকর্ড করেছিলাম কারন ফোনে চার্জ কম ছিল তখন, রেকর্ড করে , কভার আর্ট বানিয়ে আপলোড করতে একটু সময় লাগেই। ফোন সুইচ অফ হয়ে যাওয়ার আগে সেটা শেষ করার চিন্তা ছিল মাথায়। অফিসে চার্জার নিয়ে গিয়ে চার্জ করলে হয়ত এই তাড়াহুড়োটা করতে হত না। তবে অফিসে চার্জার নিয়ে যাইনি, তার পিছনে একটা কারন, একটা সত্যি ঘটনা আছে। সেটাই বলব আজ। নমস্কার , আমি সৃজন ডিজিটাল সেফটি বাংলা পডকাস্টে আজ কথা হবে ফোনের চার্জার নিয়ে। শুরু করব একটা ঘটনা বলে - বাইশে সেপ্টেম্বর সকালে whatsaap ফরওয়ার্ড হিসাবে পেলাম একটা মেসেজ, একটা ঘটনার কথা বলা আছে সেখানে । হায়দ্রাবাদের এক বড় কম্পানির CEOর ফোন ব্যবহার করে ষোলো লক্ষ টাকার ফ্রড হয়ে গেছে। মোডাস অপারেন্ডি কি ? CCTV ফুটেজে দেখা গেছে সেই CEO ফোন চার্জ করতে দিয়ে কোথাও গেছেন। তারপর তার অফিসের পিওন এসে চার্জার চেঞ্জ করে ফোন চার্জে দিল, কিছু পরে আবার এসে এই চার্জার নিয়ে আসল চার্জারে ফোন লাগিয়ে চলে গেল। আর তার পরেই একাউন্ট থেকে ষোলো লাখ টাকা গায়েব। ঘটনাটা আমার কাছে সামান্য অতি রঞ্জিত মনে হয়েছে, তবে এই রকম কিছু একটা হওয়া কঠিন কিছু নয়। এই যে চার্জার কিম্বা ডেটা কেবল ব্যবহার করে ফোন হ্যাক করার যে পদ্ধতি, অৰ্থাৎ আজ যে টপিকটা নিয়ে কথা হবে সেটার পোশাকি নাম জুস জ্যাকিং। কি হয় এই জুস জ্যাকিং এ ? আপনি আপনার ফোন কোন পাবলিক প্লেসে রাখা চার্জার বা চার্জিং পয়েন্টে ডেটা কেবল লাগিয়ে চার্জ দিলে, হ্যাকাররা আপনার ফোনের access সহজেই পেয়ে যাবে। আর একবার ফোনের access পেয়ে গেলে কি হতে পারে, সেটা সিজন ওয়ানে, একাধিক এপিসোডে কভার করা হয়েছে , আজ তাই সেগুলো রিপিট করব না। কিভাবে হয় সেটা প্রথমে বলে তারপর বাঁচার উপায় বলব। ফোন যখন আপনি প্লাগ পয়েন্টে লাগান তখন সরাসরি চার্জ হয়। কিন্তু কোন কম্পিউটারে ডেটা কেবল লাগিয়ে দেখুন, অনেকগুলো অপশন দেখায়। ফোন জিজ্ঞেস করবে আপনাকে - এগ রোল , চিকেন রোল , স্পেশাল চিকেন রোল ….. ওহ সরি সরি। ফোন জিজ্ঞেস করবে - শুধু চার্জ করবেন , নাকি চার্জ করবেন আর ফটো ট্রান্সফার করবেন অথবা চার্জ করবেন আর ফাইল ট্রান্সফার করার জন্য ফুল access দেবেন। ফোনের সেটিং ঠিক না থাকলে বা আগে থাকতেই ভাইরাস থাকলে এই তিন নম্বর অপশনটা চালু হয়ে যায়। এর ফলে হ্যাকার, ফোনের সব কিছু কন্ট্রোল করতে পারে। নতুন করে ম্যাল ওয়ার ঢুকিয়ে দিতে পারে। ফোনে আইডি পাসওয়ার্ড সেভ করে রাখলে সেগুলো সব পেয়ে যায় , OTP অন্য নাম্বারে ফরোয়ার্ড করতে পারে , ইমেলে ঢুকে যেতে পারে। এবং এরপর আপনার ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা মোবাইল ব্যাঙ্কিয়ে ঢুকে টাকা সরানো জাস্ট বাঁয়ে হাত কা খেল। এবার ধরা যাক আপনি প্লেনে ওঠার আগে এয়ারপোর্টে পাবলিক চার্জারে চার্জ করে বোর্ডিং করলেন। প্লেনে আপনার ফোন বন্ধ বা ফ্লাইট মোডে আছে। আপনি আকাশে উড়তে উড়তে জানতেও পারছেন না নিচে কি হচ্ছে। ওদিকে চার্জ করতে দেওয়ার সময় আপনার ফোন থেকে যা যা যাওয়ার , সব হ্যাকারদের হাতে চলে গেছে। আপনি আপনার ডেস্টিনেশনে পৌঁছে, ব্যাংককে ফোন করে জানানোর আগে একাউন্ট খালি অথবা আপনার সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট অন্যের কব্জায়।