Society & Culture
Indubala Bhater Hotel , Indubala Go কুমড়ো ফুলের বড়া বিউলির ডাল ছ্যাচড়া আম তেল মালপোয়া চিংড়ির হলুদ গালা ঝাল চন্দ্রপুলি কচু বাটা এই হল ইন্দুবালা ভাতের হোটেলের আটটা চ্যাপ্টার, বইয়ের। আমি বই সাধারণত ফিজিক্যাল বই, হাতে নিয়ে আরাম করে পড়তে পছন্দ করি। ইন্দুবালা ভাতের হোটেলের এত বেশি সুখ্যাতি দেখেছিলাম ফেসবুকে, হাল্কা একটু সন্দেহ হয়েছিল, তাই আমি কিন্ডল ই-বুক কিনেছিলাম। পরে অবশ্য আপশোস হয়েছিল, মনে হয়েছিল বইটা হার্ড কপি কিনলেই ভালো হত। এবার হইচইতে দেখলাম ইন্দুবালা ভাতের হোটেল। কি মনে হল, চলুন আজ সেটা নিয়েই আপনার সাথে আড্ডা দেওয়া যাক সৃজনের পডাবলীতে। “ট্যুরিস্ট হয়ে নিজের বাড়ি যেতে ভালো লাগে না” লাস্ট এপিসোডের একটা লাইনে রিভিউ ফিনিশ। এর আগে অব্দি মনে হচ্ছিল, বইতে এটা পড়েছিলাম, দেখালো না কেন, খুলনার লোক ঢাকাই ভাষায় কথা বলছে কেন এরকম। স্পেশালি , ফার্স্ট চারটে এপিসোডের সময়। শেষ চারটে এপিসোডের আগে আমি পাঠান দেখলাম প্রাইমে। তারপর ইন্দুবালার কোন খুঁত এমনিতেই কম মনে হচ্ছিল। ক্লাসের ফার্স্ট বয় যে হয় সে ইতিহাস , বাংলা এই সব সাবজেক্টে ভালো করে বলেই ফার্স্ট হয়। ম্যাথস, সায়েন্সে তো ক্লাসের প্রথম দিকের সবাই কম বেশি ভালোই হয়। ইন্দুবালা ভাতের হোটেল ওয়েব সিরিজ খুব খুব ভালো হওয়া সত্ত্বেও ফার্স্ট গার্ল বলা যাবে না। কেন বলা যাবে না বলি - দু এক দিন আগেই ইন্দুবালা ভাতের হোটেল এই বইয়ের লেখক কল্লোল লাহিড়ীর অন্য একটা বই নিয়ে লেখায় ওনার জার্নি নিয়ে লেখা আছে। সেখানে দুটো জায়গার নাম আছে - শিবহাটি আর আরবেলিয়া, দুটোই বসিরহাট শহরের কাছে, দুটো জায়গাই বসিরহাট মহকুমার পার্ট। বসিরহাট থেকে ঘোজাডাঙ্গা বর্ডার হার্ডলি দশ কিলোমিটার মতন হবে। উনি নিজে খুলনার ভাষা, সংস্কৃতি, ফুড হ্যাবিট ভালোই জানেন। আমার ও কিছুটা জানা আছে, কারন আমার বেড়ে ওঠার শহর - বসিরহাট। স্বাভাবিক ভাবেই, যখন বইতে চুই ঝালের কথা বলা হচ্ছে, ইছামতির কথা বলা হচ্ছে, আমি খুব easily relate করতে পারছি। ওয়েব সিরিজ খুবই ভালো, তবে রিলেট করতে পারলাম না। খুলনা পেলাম না , ছুঁই ঝাল পেলাম না। খুলনার লোকের ডায়লেক্ট আর ঢাকার ডায়লেক্ট এক নয় , সেটা লেখক কেন পরিচালককে বললেন না সেটা ভেবে অবাক হলাম । এই হইচই ই তো এতো এতো বাংলাদেশি কন্টেন্ট প্রোডিউস করছে, এই ডায়লেক্ট নিয়ে সাহায্য, ওনাদের বাংলাদেশ কাউন্টার পার্ট যারা আছেন, তাদের থেকে কি পেতেন না ? কি জানি । কোক স্টুডিওর মুড়ির টিন গানে বাংলাদেশের তিনটে ডায়লেক্ট ব্যবহার হয়েছে । সিলেটি আর চাটগাইয়া কে উপভাষা না বলে ভাষাই বলা যায় । খুলনার টা বোধ হয় ভাষা নয় । সে যেটাই হোক, খুলনার লোকের মুখে খুলনার ভাষা না দিয়ে টিপিক্যাল বাঙাল ভাষা হিসাবে যেটা আমরা জানি সেটার ব্যবহার ওয়েব সিরিজটার একটা বড় দুর্বলতা । আর এই সিরিজের বিরাট বড় সম্পদ - গান গুলো। একটাও জোর করে ঢোকানে বলে মনে হয়নি। তবে গান নিয়ে কিছু বিতর্ক ছিল, হাল্কা স্বজনপোষনের অভিযোগ ছিল। তবে দর্শক হিসাবে , rather শ্রোতা হিসাবে আমার ভিতরের খবরে কি দরকার। ফাইনাল প্রোডাক্ট ভালো হলেই ভালো। গানের পাশাপাশি এডিটিং এর আলাদা করে প্রশংসা করব। পুরো সিরিজ জুড়ে অসংখ্য জাম্পকাট - তাতে গল্পে কোন ঝটকা লাগে নি। আমি যদি বইটা না পড়ে সিরিজটা দেখতাম, আমার বিশ্বাস আরো ভালো লাগত। বইটা পড়তে পড়তে খুব রিলেট করে নিয়েছিলাম। নিজের মনে একটা ছবি আঁকা হয়ে গেছিল, সেটা দেখেছি, অনেক কিছুই মেলেনি। ইন্দুবালার নিজের হাতে লাগানো কুমড়ো শাক রান্না করে হোটেল শুরু করার ব্যাপারটা রাখা যেতে পারত। “চিংড়ির হলুদ গোলা জল” এই গল্পটা পর্দায় খুব খাপছাড়া লেগেছে। গল্পে কিন্তু খুব প্রয়োজনীয় একটা অংশ। খুলনার মানুষের মুখে বাঙাল ভাষা তো কানে লেগেছে, এটা তো আগে বলেইছি। কিন্তু এরকম খুঁতখুঁতানি এড়িয়ে আমি বলব , দেখুন - যদি না ইতিমধ্যে দেখে থাকেন, আর দেখতে ইচ্ছে না করলে করলে বইটা পড়ুন। সাম্প্রতিক অতীতের খুব ভালো কাজ গুলোর একটা। মিস করবেন না। আর একটা খুব ভালো ওয়েব সিরিজ দেখলাম - ডাকঘর, ওটা নিয়েও বলব একদিন । যদি মনে হয় এই এপিসোড আপনার ভালো লেগেছে, তবে আপনার বন্ধুদের সাথে ফেসবুক, whatsapp এ শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর ফলো, সাবস্ক্রাইব এগুলো করে রাখবেন। তাহলে এপিসোড আসলে মিস করবেন না। --- Send in a voice message: https://podcasters.spotify.com/pod/show/srijaner-podaboli/message

