Technology
নামমাত্র খরচেই হোলি পার্টি। লিঙ্ক খুলতেই উধাও টাকা। খবরের কাগজের শিরোনাম এটাই। খবরটা আমার চোখ এড়িয়ে গেছিল, whatsapp পাঠিয়ে আমার কলিগ, সুরভী জানতে চাইল, ডিজিটাল সেফটিতে এটা নিয়ে আলোচনা করা যায় কি না। খবরটা পড়লাম ভালো করে। এপিসোড করা যায় অবশ্যই। করব বলেই ঠিক করেছিলাম ,কিন্তু করা হল না। ওদিকে দোলও চলে গেল , তাই ভাবলাম একবার ছোট করে পুরোটা বলা যাক , এবং এই একটা এপিসোড - একটা সামারি এপিসোড হয়ে থাকুক। যারা digital safetyর আগের কোনো এপিসোড শোনেননি, তারা জাস্ট একটা এপিসোড শুনে মোটামুটি আইডিয়া করতে পারবেন পুরো ব্যাপারটা নিয়ে। ক্রিসমাসের সময় আমার আর এক কলিগ, শুভজিৎ পড়েছিল ফ্রডদের পাল্লায়, সেক্ষেত্রে বো ব্যারাকস এর এক নামী কেক বেকারের নাম করে ফ্রড হচ্ছিল। আমার বিশ্বাস ভ্যালেন্টাইন্স ডের সময়েও কিছু না কিছু করে থাকবে এরকম। পরেও হয়ত পয়লা বৈশাখ, ঈদ বা এরম কোন উৎসবের নাম করে ফ্রড হবে । তাই উৎসব টা মুখ্য নয়। টেকনিকগুলো বোঝাই মেন জিনিস। সেসব নিয়েই, আমি সৃজন, ডিজিটাল সেফটিতে, আপনার সাথে আড্ডা দেব আজ। এক মিনিট দাঁড়ান, চা টা বলি । এই কালীদা, দুটো চা। হ্যাঁ, যেকথা বলছিলাম। কি কি ভাবে ফ্রড গুলো করা হয় - পরিচয় চুরি - Identity Theft বা পরিচয় চুরি , এই দিয়েই ডিজিটাল সেফটি , এই পডকাস্ট শুরু হয়েছিল। আপনার বিশ্বাস অর্জনের জন্য, আপনার চেনা কারো কাছ থেকে যদি হোলি খেলার বা নিউ ইয়ার পার্টি করার ইনভিটেশান আসে , আপনার বিশ্বাস জন্মাতে বাধ্য। উল্টো দিকে, আপনি অসতর্ক থাকলে, আপনার সারল্যের সুযোগে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে, বা আপনার নকল প্রোফাইল বানিয়ে , আপনার পরিচয় ব্যবহার করে ফ্রড হওয়া আশ্চর্যের কিছু না ফিশিং - ফ্রড করার সহজতম এবং সব থেকে প্রচলিত পদ্ধতি। ইমেলে লোভনীয় অফার আর সাথে একটা লিঙ্ক। ক্লিক করলেই টাকা গায়েব হয়ত হবে না, তবে ক্লিক করে কোন ডিটেল দিলে, সেটার সাহায্যে কিছু হওয়া আশ্চর্যের না ভিসিং আর স্মিশিং - ফোন করে “হাম ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বোল রাহা হ্যায়” বলে কার্ড নাম্বার , সিভিভি এসব যে চাওয়ায় হয়, সেটা ভিসিং বা ভয়েস ফিশিং। একই রকম ভাবে SMS পাঠিয়ে যে ফিশিং করা হয় সেটা স্মিশিং। অনেক লোকের টাকা খোয়া যায়। অনলাইন কেনাবেচার ওয়েবসাইট - বাড়ি ভাড়া দেওয়ার বিজ্ঞাপন বা পুরোনো জিনিস বেচার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় যে সব সাইটে, চোরেরা ওৎ পেতে থাকে সেখানে। আপনি বিজ্ঞাপন দিলেই এমন কাস্টমার হিসাবে ফোন আসবে যেটা too good to be true . আর সেই ফাঁদে পা দিলেই, এক্যাউন্ট থেকে টাকা ভ্যানিশ। উল্টো পাল্টা জায়গা থেকে ডাউনলোড করা মোবাইল app - মোবাইলে আপনি সরাসরি APK ডাউনলোড করে app ইনস্টল করেন ? খুব সাবধান। প্লে স্টোরে যখন app থাকে, সেটা অনেকগুলো সিকিউরিটি চেক পেরিয়ে আপনার কাছে আসে। কিন্তু সরাসরি apk নামালে সেটা হয় না। তাই ওটা না করাই ভালো স্কিমিং -স্কিমিং বা কার্ড ক্লোনিং। তবে এটা অনেক অনেক কমেছে ২০২০ র ডিসেম্বরের পর থেকে। RBI এর নিয়মের ফলে বাধ্যতামূলক হয়েছে চিপ বেসড কার্ড এবং ATM এ EMV কার্ড এর চিপ থেকে ডেটা পড়ার বাধ্যবাধকতা চালু হওয়ার পর। তবে আবার কোনো দিন স্কিমিং ফিরে আসবে না, এমন কোনো গ্যারান্টি তো নেই। তাই নিয়মিত পিনটা পাল্টাতে ভুলবেন না। রিমোট স্ক্রিন শেয়ারিং app - টিমভিউয়ার আর এনিডেস্ক - এই দুটো aap এর নাম মনে রাখুন , কুইক সাপোর্ট বলে ইনস্টল করানো হয়, এটা ইনস্টল করে otp দিলে আপনার ফোনের সব কিছু সাইবার চোরেরা দেখতে পাবে। তাই আপনার যদি যথেষ্ট পরিমান টেকনিক্যাল নলেজ না থাকে, তাহলে ভুল করেও এই app ইন্সটল করবেন না সিম ক্লোনিং বা সিম সোয়াপ - এর আগে যেগুলো বললাম, তার কোন একটা টেকনিক ব্যবহার করে ডুপ্লিকেট সিম নেয় চোরেরা । আর মোবাইল নম্বর হাতে পেয়ে গেলে, ফ্রড করা অনেক সহজ হয়ে যায় সার্চ ইঞ্জিন - একটা ছোট্ট জোক শোনাই - কোন কিছু লুকিয়ে রাখার বেস্ট জায়গা হচ্ছে গুগল সার্চের সেকেন্ড পেজ । আমরা সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম কয়েকটা রেজাল্টকে এত বিশ্বাস করি , যে পরের গুলোর দিকে ফিরেও দেখি না। এর সুযোগ নেয় জালিয়াত গুলো । কাস্টমার কেয়ারের ফোন নাম্বার হিসাবে নিজেদের নাম্বার দিয়ে রাখে বিভিন্ন সাইটে । কেউ গুগল করে সেই সাইটে গিয়ে ওই নাম্বার দেখে ফোন করলে, তার মগজ ধোলাই করে মুরগী করা জাস্ট ম্যাটার অফ টাইম । QR কোড - চার নাম্বার পয়েন্ট আর এই শেষ পয়েন্ট একে অন্যকে কমপ্লিমেন্ট করে। শুধু QR Code নিয়ে, স্পেশালি UPI QR নিয়ে আস্ত একটা এপিসোড আছে। সম্ভব হলে শুনবেন। Whatsapp এ কেউ কিউ আর পাঠালে, খুব সিওর না হলে এড়িয়ে চলবেন। আর টাকা নেওয়ার জন্য UPI PIN দিতে হয় না, এটা মাথায় রাখবেন , ব্যাস। এই একটা এপিসোডে আগের সব এপিসোডের পডকাস্টের সামারি হয়ে গেল কিন্তু। এটাতে যা বললাম , মোটামুটি এটুকু মাথায় রাখলেই ফ্রড এড়ানো সহজ হবে।